Tricks Boss BD - Know Best knowledge from here: স্মৃতির-পাতা
Showing posts with label স্মৃতির-পাতা. Show all posts
Showing posts with label স্মৃতির-পাতা. Show all posts

Wednesday, June 26, 2019

আমার একটি জগৎ আছে I have a Screct World

11:36 0
আমার একটি জগৎ আছে    I have a Screct World
আমার একটি জগৎ আছে.....✔️✔️

তিলোত্তমা
তুমি কেমন আছ? জানি খুব ভাল আছ। তোমাকে মাঝে মাঝে দেখতে প্রচন্ড ইচ্ছে হয়। দেখেও ফেলি।
তুমি অবাক হবে জানি। তোমাকে দেখলাম কি ভাবে।
তিলোত্তমা!
আমার একটি নিজস্ব জগৎ আছে।  নিজস্ব এক টা বাড়ি আছে। একটি ঘর আছে সে জগতে।
ঘরটি শূণ্যতা দিয়ে তৈরী।
সে ই শূণ্যতায় পরিপূর্ণ তোমার একটি ছবি দিয়ে।
তোমার কিছু স্মৃতি দিয়ে।
এই ঘরটাতে প্রজাপতি দের বস বাস। আমি চাইলেই সে গুলো কে তাড়িয়ে দিতে পারি না।
মূলতঃ ভালোবাসাটা আমার বিশ্বাসই হয় না।
মাঝে মাঝে মানুষজনের সাথে ঝগড়া করি এটা নিয়ে।
কারণ ভালবাসা বলে কিছুই নেই।
সত্যিকার অর্থে আমি ভালবাসার মানেটা গভির ভাবে বুঝতে চেষ্টা করতাম। কিন্তু যতটুকু বুঝলাম। তাতে মনে হল ভালবাসা বলে কিছুই নেই।
 তবুও চারদিক থেকে যে ভালোবাসা কথাটি শিখেছি তাঁকেই ধামাচাপা দিয়েছে।
তবে এটা নিশ্চিত যে, আমার মাঝে এক খেলাঘর আছে।
এই খেলা ঘর থেকে আমি বাস্তবে ফিরে যেতে ভালো লাগে না।
আধারে সেই খেলা ঘরটা চির রঙ্গিন
আমি আমার খেলা ঘর নিয়ে ভালই আছি।
স্বপ্নহীন মানুষ তো বেঁচে থাকার জন্য এটুকু আশা করতেই পারে তাই না??
তিলোত্তমা?
আমি নিজের জন্য বাঁচি। নিজের জন্য লিখি। নিজে নিজে যা পারি তা করি।
তোমি তো জানই। আমার দ্বারা কিচ্ছু হবে না।
আমি যখন দাড়ি পাল্লায় নিজেকে মাপি তখন আমার কাটা শূণ্যের দিকে ঝুকে থাকে।
আমি হু হু করে হেসে উটি।
এমন হয় কেন আমার সাথে?

অনেক দিন হল তোমাকে নিয়ে লিখি না।
তোমাকে নিয়ে ভাবতেও ভুলে যাই। মাঝে মাঝে তোমার স্মৃতি এসে হামলা করে। প্রচন্ড খারাপ লাগে তিলোত্তমা।
তাই তোমাকে ভুলে যেতে চাই। ভুলে থাকি।
কিন্তু আমার পাজড়ের বাম  দিকে তিন ইঞ্চি নিচের হৃদয় টা মানে না।
মাঝে মাঝে ওটা বোকা বাচ্চাদের মত কেঁদে ওঠে।
তুমি এতটা দূরে মেনে নিতে পারি না।

আমি এখন টিক হয়ে গেছি তিলোত্তমা।
আমি এখন আর কাঁদিনা।
তবে টিকই তোমাকে একটা তাঁরা ভেবে আমার দিন গুলো কাঁটিয়ে দেই।
তিব্র মাথা ব্যাথা এখন আমার নেই।
তোমার স্মৃতিময় সময় গুলো ভাবলেই আমি পাগলের মত হয়ে যেতাম। এখন আর হয় না তিলোত্তমা। এখন আমি তোমাকে ভুলে গেছি।

ধরো আমি বিকেলে একা একা হাটছি। তখন সে সময়ের কথা মনে পড়ে যায়।যখন তোমার সাথে কথা বলতাম কোনো এক বিকেলে। যখন মন খারাপ নিয়ে তোমাকে হাজারও শব্দের কবিতা বলতাম।
তুমি মুগ্ধ হয়ে বলতে "বাহ্ কবি সাহেব " "খুব ভাল হয়েছে "
তুমি তখন জানতে না আমি আমাক কষ্ট গুলো কবিতার প্রতিটি শব্দ বিলিয়ে দিতাম।
আমার বিষন্ন সময় গুলো কে তোমাকে সঙ্গি করে রাখতে চেয়েছিলাম।

 জগৎ কে আমি নিজের মত করে সাজিয়ে নিয়েছি।
সে টা তুমি আমার জিবনে তুমি আসার আগেই।
আমি আমার মত থাকবই।
আমার জগৎ টা আজ অন্ধকার। আলো দেখতে পায় না মোটেও। ভালবাসা নামক কষ্টে সেটা আজ গুমরে মরছে।

তোমার দোষ দেই না আমি। এসবের জন্য।
তুমি তোমার মত চেষ্টা করেছ। আমাকে একাকিত্ব থেকে বের করতে । তবে তুমি পারনি।
পারনি আমার খেলাঘর থেকে আমাকে দূরে রাখতে।
কেউ পারবেও না। আমি আমার তিব্র ইগো নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।
আমি তোমাকে ভালবাসি সেটা আমার খেলা ঘর ছাড়া কেউ জানে না।
তোমাকে ভালবাসি সেটা আমার কাছে ভাল লাগে। যখন আমি তোমাকে বলে দিব আমি তোমাকে ভালবাসি তখন সেটা আমার ভাল লাগবে না।
জানি তুমি বুঝবে না। এসব।
আমাকে ভুল বুঝবে।
আমি চেয়েছিলাম তুমি তোমার মত।
আমি আমার মত।
তুমি আমাকে ভালবাস। ব্যাস। এনাফ।
কিন্তু সেটা তুমি পার নি।
তুমি তোমার মত করে আমাকে চাইছিলে।
কিন্তু তুমি জানো সেটা সম্ভব নয়।
আমার আলাদা জগৎ আছে।
খুব ছোট থেকেই। মনের গভিরে আমি পু্ষে আসছি।
সেখানে সুধুই আমি।  আমি ছাড়া সেখানে কারোর প্রবেশের অধিকার নেই।

Sunday, March 03, 2019

স্মৃতিকথা I miss you Can't Forget you

12:36 0
স্মৃতিকথা  I miss you Can't Forget you
তখন বয়স কত হবে?
হয়তো ১৪-১৫!  এর চেয়ে এক বছরও বেশি নয়।
কোনো একদিন...
রাত তখন ২.২০ বাজে!  আশ্চর্য আমার ঘুম নেই।
কোনো একটা কারণে আমার চোখে ঘুম নেই।
আমি খুব একটা চেষ্টা করলাম না ঘুমাবার।
কারণ ঘুম যখন আসছে না তখন ঘুমানোর কি দরকার।
ইচ্ছে করে যখন ঘুম আসবে তখন ঘুমালেই হয়।
জোর করে তো আর যাই হোক ঘুম হয় না।
মানুষ অন্তত এই একটা জিনিস জোর করে করতে পারে না।
তাই বৃথা চেষ্টা করলাম না।
বরং ভাবতে লাগলাম আগামি কাল কি করব?
তখন এতটাই ছোট ছিলাম।
কি করব তা সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না।

এক ঘন্টা আগে(রাত ১টা হবে) একটা চিটি লিখেছি।
আমার মোটামুটি ধরনের সব কিছুই মনে থাকে কিন্তু কেন জানি এই চিটির এক অক্ষর ও আমার মনে নেই।
কেন মনে নেই?
আমি তো সব সময় স্মৃতি কে আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই।
তখন হয়ত খেয়ালই ছিল না যে,  চিটির একটা কপি রেখে দিলে কেমন হয়।
হয়ত খুব একটা জ্ঞান ছিল না তখন তাই রাখা হয় নি।
আর রাখতেই হবে এমন কোনো কথা নেই।

ঘুম আসছিল না তার কারণ আবার অন্য টা।
কি লিখেছি তার জন্য না।
কি হবে তার জন্য না।
ঘুম আসছিল না  এর জন্য যে চিটি টা পৌছাব কি করে।
একটা মাত্র মাধ্যম খুজে পেলাম।
আমি ছাড়াও এই চিটিটার কথা
৫ জন মানুষ জানে।
ভুল বললাম আসলে আরেক জন মানুষ যানে সে হল যার কাছে আমি চিটি লিখছি তিনিও যানেন।
তার মানে হল আমি সহ টিটির কথা জানে ৭ জন মানুষ।

রাতে কখন ঘুমিয়ে যাই টের পাই নি।
তখন আমার মোবাইল ছিল।
তবে মোবাইলে বলা টিক সহজ কাজ ছিল না।
তাই চিটিতে বলতে গেলাম।

চিটি টা এক চাচাতো বোনের মাধ্যমে পাঠালাম।
চিঠি পেয়ে মানুষ কত্ত খুশি হয়।
তার ক্ষেত্রে হল বিপরীত।
আমি চেহারা দেখেই বুঝতে পারলাম কপালে খুব খারাপি আছে...
ঠিক ঠিক তাই ঘটল।

আজ একটা কথা ভাবি..
আমার সাথে ঘটনা টা না করলেও তো পারতো...
সে যদি মনে মনে রেখে দিত তবে কি হত..?
তার যদি এমন ভাব হত সে এসব খেয়ালই করেনি।
তার এতে কিছু আসে যায় না।
সে তো এমন ভাব দেখালেই পারতো...!
কিন্তু তা তো সে করে নি।
তার ভিতরের সব রাগ আমার চিটির উপর দিয়েই ঝাড়লো...

আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম।
সে তার নিজ হাত দিয়ে চিঠিটা এত কুচিকুচি করে টুকরো টুকরো করেছে আমার দেখেই বুকের ভেতর টা মোচড় দিয়ে উটলো।
মানুষ কে এভাবে অপমান করতে হয়?
আমি সেই প্রথম শিখি তার কাছ থেকে।

তার এই রাগ দেখানোর কারণও অবশ্য আছে।
আমার কারণে বেচারি স্কুল পযর্ন্ত আসতে পারে না।
আমার মহল্লার এমন কোনো ছেলে নাই যে  জানে না এই কথা।
অবশ্য আমি একটা আদর্শ ছেলে।
যে কাজ টা করেছে সে হল আমার এক ক্লাস মেট।

কুচিকুচি করা চিঠি নিয়ে সে হ্যাডমাস্টারের রুমে উপস্হিত হল।
আমার নাম মাইকে উচ্চারণ হল।
৮ম শ্রেণীর ছাত্র : লুৎফুর রহমান কে অফিসে আসার জন্য বলা হচ্ছে।
আমি ভিতুর ডিম ছিলাম তখন।
সে অনুযায়ী আমি খুব ঘাবড়ে গেছিলাম।
অফিসে গিয়ে দেখি ৪ টা মেয়ে আর হেডমাস্টার।
একটা পর সহকারী হেডমাস্টার আসলেন।
দুটি বেত এক সঙ্গে করে আঘাত করতে লাগলে।
আমি সজোরে কাঁদছি।

ছিঃ কি লজ্জার কথা আমি একটা চিঠি দিয়েছি বলেই এভাবে মার খেতে হচ্ছে।
কই আমি তো তাকে জড়িয়ে ধরি নি।
কিংবা উত্যক্ত করিনি।
আমি তো কোনো দিন তার দিকে তাকাইও নি ভাল করে।
আমি কি খুব মারাত্মক অপরাধ করে ফেলেছি?

আমি সে দিন এই কথা বলার সাহস পাই নি।
আসলে কথা গুলো আমার জানাই ছিল না।
মানুষের ভাল মন্দ বুঝার ক্ষমতা কখন হয় জানি না।
তবে তখন আমার মনে হয়েছিল আমি সঠিক কাজই করেছি।
আমি খুব একটা অন্যায় করিনি।
তখনো আমি জিবনের কাছে একজন ছাত্র মাত্র।
আমার শিখাটা সবে মাত্র শুরু হয়েছে।

ঘটনাটা শুরু হয় যখন আমি পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি।
তখন টিফিন প্রিয়ড চলছিল।
আমি যথারীতি খুব সহজ সরল ছিলাম।
তবে আমার পাশের মানুষ গুলো ছিল মনোবিজ্ঞানী টাইপের।
তারা টিকই আমার বিপরীত একটা মানুষের নামের সাথে আমার নামটা জুড়ে দিয়েছিল।
নাম টা শুধু মাত্র খেলার ছলে লিখা হয়েছিল।
ছেলে দুটি তাদের নামের পাশে মেয়ে দুটির নাম লিখার জন্যই লিখেছিল।
আমিও কেন যেন মেনে নিয়েছিলাম।
কেন যেন ওকে ভাল লাগতো।
খুব একটা সুন্দর না সে।
তবে অসাধারন।
ভয়ঙ্কর ধরনের সুন্দর।
সেই সুন্দরের কোনো ব্যাখা হয় না।
সব সময় সব কিছু ব্যাখাও দেওয়া যায় না।
আর চাইলেও আমি পারব না।
কারণ আমি তার চেহারা টা ভুলেই গেছি।
আর মনে হয় আমাকে দেখলে সে ভূত টূত দেখার মত অবস্থা  হবে।
কারণ সেই পঞ্চম শ্রেণীর লুৎফুর।
আর আজ কলেজ-ভার্সিটিতে পড়া লুৎফুর এক না।
আজ চাকুরিজীবি লুৎফুর সেই অষ্টম শ্রেণিতে পড়া লুৎফুর না।
তবে খুব কষ্ট হয় মানুষ টার জন্য...
কারণ??
মানুষ টা তার নিজ হাতে তার ভাগ্য কে হত্যা করেছে।
তার সেই অষ্টম শ্রেণী পযর্ন্ত লেখাপড়া।
শেষ পযর্ন্ত এমনও দেখতাম স্কুলে আসতো টিকই তবে স্কুলের পাশে তার আত্মীয়দের বাড়িতে চলে যেত।
আজ মনে মধ্যে প্রশ্ন জাগে কেন সে এমনটা করতো?
কেন এত ঘৃণা করতো একটা মানুষ কে...
এমন কি সে জেএসসি পরিক্ষা পযর্ন্ত দেয় নি।
মানুষ টা তো লেখাপড়ায় খুব ভাল ছিল।
তবে এমন কেন ঘটল?
হয়ত সে ইচ্ছে করেই লেখাপড়া করতো না।
তার অহংকারের প্রতিক! তার রুপ নিয়ে একটা আয়নার সামনে সারাদিন বসে থাকতো।
আর কিছুই হতো না।
দিন রাত কোন দিকে চলে যেত সে টেরই পেত না।


আজ অনেক দিন বাদে সেই অপ্রিয় মানুষ টার কথা মনে পড়ে হাসছি।
আজ আর কান্না পাচ্ছেনা।
যখন লিখছি আমি "আমি কাঁদিছিলাম"
তখন হো হো করে হেসে দিয়েছি।
ইচ্ছা করে হাসি নি।
আবার জড়তা নিয়ে হাসি নি।
আজকের পেক্ষাপটে হয়ত হাসি টা আসছে।
কিন্তু তখন? 
এখন আর তখন কতটা তফাৎ।
থাকুক না কিছু অযাচিত কথা কিংবা গল্প....
কিছু অসমাপ্ত গল্প গুলি ভালই লাগে.....

Thursday, February 28, 2019

বন্ধুদের স্মরণে আজও সময় কাটে Bondhu Tura Chili Sudu Turai Takbo

22:20 0
বন্ধুদের স্মরণে আজও সময় কাটে Bondhu Tura Chili Sudu Turai Takbo

মনে পড়ে আজও  তোমাকে

-লুৎফুর রহমান

2035 সাল....
অফিস থেকে আসতে আজ বড্ড দেরি হয়েগেছে।
মার্চ মাসের শেষের দিকটা প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে তারই ধারাবাহিতায় আজও বিরামহীন ভাবে বৃষ্টি ঝরছে।
মাঝে মাঝে সাপের ছোবল দেওয়ার মত বজ্যপাত হচ্ছে। বাইরের থমথমে অন্ধকার হাত মেললে হাত দেখা যায় না। অন্ধকারে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে রাস্তা ধরে হেটে বাসায় আসলাম।
বিদ্যুৎ নেই ঘরের মধ্যে,  ছোট একটা কামরা নিয়ে একটা হোটেলে উটেছি। ইতিমধ্যে দু'মাসের ভাড়া বাকি।
চাকুরি টা পাওয়ার আগে তানভিরের মায়ের অফিসে ছিলাম।
বিয়ের পর স্বামী স্ত্রী এক অফিসে কাজ করব সেটা আমার কাছে ভাল টেকেনি।
তাই অন্য আরেকটি অফিসের ছোট্ট একটা চাকুরি জোগাড় করলাম।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ তারিখে তারভিরের মায়ের চাকুরি চলে গেছে।
বাসায় ডুকে আবিস্কার করলাম কেন্ডেল আনা হয় নি।
মোবাইলে চার্জ যৎসামান্ন আছে তাতে মিনিট পনের চলা যাবে।
হঠাৎ মুটোফোন টা বে রশিক কন্ঠে ডেকে উটল।
ব্যাটার রিংটোন টা পাল্টাতে ভুলে যাই ২০২৭ সালের দিকে একটা গান ভাল লাগত।
আর এটাই সেট করে রেখেছিলাম।
আজ কাল আর ভাল লাগে না।
শুনতাম, বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষ কেমন যেন নিখাট হয়ে যায়, তাই হচ্ছে আমার সাথে।
ফোন টা আমি উটাবো না। এই শক্তিও নেই গত দুই মাসের কোনো বেতন পাইনি।
তাই ফোন ধরার সাথে সাথে ওপার থেকে চির চেনে কণ্ঠে কর্কশভাবে ছাত্র শাসন করার ভঙ্গিতে বলে উটবে "আপনার হয়েছে টা কি শুনি? আর কত মিথ্যাে বলবেন? ছেলেকে নিয়ে কি পথে নামব?  বাড়িওয়ালা বলেছে কালকের ভিতরে টাকাটা শোধ না করলে বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে"
গত দু মাস ধরে এটাই শুনে আসছি, তাই আজও শুনতে হবে.
ফোনটা নতুন (তিন মাস আগে এক বন্ধু গিফট করেছিল) ব্যাটাকে হাত দিয়ে স্পর্শ করা লাগে না।
মুখে কথা বললেই কাজ করে।
ফোন রিসিভ করলাম
-হ্যালো?
-কেমন আছ?
-ভাল (অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে)
-কি করছ?
-না তো কিছু না!
-কিছু না মানে (রাগি কণ্ঠে)
-না এই তো অফিস থেকে ফিরলাম, তুমি?
-না কিছু না, 
-একটা খুশির সংবাদ আছে!
- কি (আকাশ থেকে পড়ার ভঙ্গিতে) খুশির খরব?
-জ্যি!  খুশির খবর!
-তা খুশির সংবাদ টা দিবেন? (ন্যাকামি কণ্ঠ)
- আমাদের আরেকটা বাবু হবে!!!
-ওয়ায়!  সত্যিই?
-হুম সত্যি
-শুন?
-কি?
-আরেক টা খুশির সংবাদ আছে!
-সেটা কি?
-আমার বাল্যকালের বন্ধু তার কাছে কিছু টাকা ধার চেয়েছিলাম, বলেছে দিবে, গতকাল থেকে তিনদিনের ছুটি তাই কালকের বাস ধরে আসছি।

ফোন কেটে দিলাম!
তিনদিনের ছুটি অথচ কত প্লান।
একটা নোট খাতা খুললাম প্রায় ১৭ বছরের পুরোনো।
আজ স্মৃতিতে আমি ডুবে যাব ১৮ বছর আগে ফিরে গেলাম।
গুগল থেকে রেখে দেওয়া ডাটা গুলো ডাউনলোড করলাম। যেখানে অনেক গুলা ছবি এবং বই টাইপের ডকুমেন্ট আছে
মেসেইজ রিডার টা অন করতেই পুরোনো মেসেইজ গুলো ভেসে আসতে লাগল।
সবার উপরে আছে "ADG"
তারপরের নামটা অজানা  "Shimul"
তার পরেই আছে "Showkot "
তারপর shahim
তার পরের রেঙ্কটা ধরে রেখেছে "Kaiyum And Fahmida And Taher"
হাতে থাকা নোট টা পড়তে লাগলাম।
একটা জিনিস বাকি রয়ে গেছে ADG এর  মানে আজও বর্ণণা করা হয় নি।
ADG মানে হল..........(এই ভাবে রেখে দেওয়া ছিল)
আজ তাহলে এর পাশে ADG এর অর্থ লিখেই ফেলি
..ADG - A Dangerous Girl
তার মানেটা আমার কাছে অন্য রকমের ছিল "আমার কাছে একজন ভয়ঙ্কর মেয়ে মানে হল যে খুব স্পর্শকাতর আর অতিসংবেদনশীল যাকে ছোয়া মাত্রই তার মধ্যে থাকা সব রোগ তোমার মধ্যে চলে যাবে আর তুমি তার বন্দী হয়ে যাবে।
যেখান থেকে তুমি কোনো দিনই ছাড়া পাবে না ।
একটা গাছের শিকড় যতটা ভয়ঙ্কর ততটাই।
একটা গাছ যখন কোনো জায়গায় শিকড় গাড়ে তখন সে জায়গাটার মধ্যে এমন ভাবে বিচরণ করে সেটা মোটামুটি ভাবতে গেলে ভয়ঙ্কর ধরনের।
এই হল নামের ব্যতিক্রম। আমাদের জগতে কিছু কিছু ব্যাপার আছে যে গুলোর অর্থ ভিন্ন হয়।
নাম এক কিন্তু অর্থ ভিন্ন।
হাতিরজিল নাম শুলনে কেউ হয়তো ভাববে সেখানে গেলেই হাতি আর হাতি। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও সে রকম না।
তাই কি হয় নি?
হে তাই হয়েছে, তা না হলে আজও কেন এমন নোট খাতা নিয়ে বসতে হয়?
হঠাৎ আমার ফোনের বেরশিক কণ্ঠে আবারো ঘোর কাটল।
বুঝতে পারলাম আসলে ঘরে কোনো আলো সেই আর আমি কল্পনায় ছিলাম।
ফোনের ওপার থেকে অপরিচিত একটা কণ্ঠে আমার নাম
" কে লুৎফুর?
-হুম আপনি?
-আমি কয়েছ!
-ওহ্ ভাল আছিস?
-হুম ভাল,  তর টাকাটা জোগাড় হয়েছে, চাইলে এক্ষুণি পাটাতে পারি।
-তার আর দরকার নেই, আমি আগামি কাল বাড়ি আসছি,  এই বার তর সাথে দেখা করেই ছাড়ব তা না হলে আমার নাম লুৎফুর না।
-দূর ব্যাটা!  তর বড় বড় কথা গুলো আর যায় না
-যা সালা দেখেনিস!

লাইন কেটে গেছে, বুঝতে পারলাম ফোনের চার্জ নেই।
কয়েছ বর্তমানে স্পেন থাকে।শুনেছি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা কামায়,  নিজের ব্যাবসা আর এজেন্সি নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
এবার বাড়িতে গেলে শওকতের সাথেও দেখা হবে।
ব্যাচারা শওকত শেষমেশ আফ্রিকার দেশ ব্রাজিলে পাড়ি জমাতে বাধ্যে,  ফ্রান্সে যাওয়ার পর কি একটা সমস্যা হয় তার পর দেশে আসে,  বিয়েটা সেরে তবেই ব্রাজিলে যায়।
অবশ্য বিয়ে আমি ছিলাম না।
তখন কি একটা দরকারে আমি চট্টগ্রাম ছিলাম
তাই আর  থাকা হয় নি।
ও হে,গত মাসে তার একটা বেবি হয়েছে।
আমার কাছে একটা ছবিও পাটিয়েছিল, দেখতে বাবার মতই।

মার্চ মাসের ২৯ তারিখ সিলেটের বাসে উটি রাত বারোটা এক মিনিটে।
সকাল পৌনে ৬ টায় বাস পৌছাল সিলেটে।
বাসা আগের জায়গায় নেই।
নদী ভাঙ্গনে বাবার পৈতৃকসম্পত্তি নিয়ে গেছে,
তাই বাসাতে থাকা।
বাসাটা মিরবক্সটুলার দিকে, একটা প্রাইভেট কার ভাড়া করলাম। বাসা পৌছতে পৌছতে সময় হল অনেক, প্রায় ৮ টার কাছাকাছি।
বাসায় পৌছে দেখি মহা হুলুস্তুল।
বাড়ি ওয়ালা তানভির কে এক হাতে ধরে রেখেছে।
বিষয়টা বুঝার বাকি নেই।
গতকালে কথা মতই বাড়িওয়ালা এসেছে বাসা থেকে বের করতে।
আমি এগিয়ে আসছি থেকে তানভিরের হাত ছাড়ল
-সামালাইকুম ভাইজান
-ওয়ালাইকুম
-তা বাসা ভাড়া না দিয়া বৌরে রাইখা যান কৈ?
-ভাই আপনি বাসায় যান,  আমি ভাড়া নিয়া আসছি।

বাসার সবার মন খারাপ,  নিজেই গামছা তুয়ালি নিয়ে বাথরুমে ডুকে গেলাম।
গরম পানির শাওরটা মনে হয় এ জনমের না।
গত কোনো জনমে তৈরী করা হয়েছে।
বাথরুমে সাবান পর্যন্ত নেই,
মন খারাপ করার বদলে ভাল মনে গোসল সেরে আসলাম,
খাবার টেবিলে শুধু মাত্র আমি আর তানভীর।
তানভিরের মা কখনো আমাদের বাপ ব্যাটার মধ্যে আসে না।
-কিরে ব্যাটা স্কুলে যাস?
-হু
-মন খারাপ?
-না
-আর একটু ভাত নে
-না, পেট ভরে গেছে
-তাই?
-হু
-তর জন্য এটা জিনিস এনেছি।
দেখবি?
-হু দেখাও?
-আগে খেয়ে নে
খাওয়া শেষ করে মার্কেট ঘুরে একটা সাইকেল কিনে নিয়া আসলাম,
আসার সময় তানভিরের মাকে ফোন দিয়ে বললাম তানভিকের যেন বাসার বাইরে যেতে না দেয়।
তানভিরের বয়স অনেক!  আজ তাকে প্রথম এটা সাইকেল উপহার দিলাম।
তানভিরের চোখে পানি চলে আসল সাইকেল দেখে।
আমার চোখেও পানি আসার উপক্রম কোনো মতে, পানি টেকিয়ে বললাম
-কিরে ব্যাটা পছন্দ হয়ে?
-হ্যাঁ বাবা অনেক পছন্দ হয়েছে, লাভ ইউ বাবা।
তানভিরের চোখ দিয়ে পানি পড়েই যাচ্ছে।
ব্যাটা হয়েছে আমার মত, সামন্য কিছু তেই চোখের জল চলে আসে।

আজ বিকেলে কয়েছের সাথে দেখা করব।
ওর কথা মনে হলেই বুকের মধ্যে কেমন চিনচিন ব্যাথা করে!  অবশ্য গ্যাস্ট্রিকজনিত কি না তা পরিক্ষা করে দেখা হয়নি।
হোটেল থার্টি ফাইভের সামনে দাড়িয়ে আছি হঠাৎ কয়েছ আসল, সৌজন্য আলাপ হবার পর আমি বিস্মিত!  যেন তিনজনমের পুরোনো কোনো আশ্চর্য বস্তু আমি দেখছি।
একটা মেয়ে এগিয়ে আসছে, ছোট্ট মেয়েটা কার সে সম্পর্কে আমি অবগত হয়ে গেলাম।
আমাদেরই ক্লাসমেট লুৎফা এবং তার মেয়ে।
-কিরে কেমন আছিস "লুৎফা বলল
-নারে ভাল! তুই?
-হু, ভাল।
লুৎফার এখন একটা প্রাইভেট মেডিকেলে সিনিয়র অফিসার, চার বছর প্যারামেডিক শেষ করে ঢাকায় বিএসসি করেছে। সেই সুবাদে ঢাকায় কবির সাহেবের সাথে দেখা এবং বিএসসি শেষ করে তারা বিয়ে করেছে। উভয়েই একি মেডিকেলে চাকুরি করে। লুৎফা কবিরের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল। দেখেই বুঝা যাচ্ছে ব্যাচারা লুৎফার মত ব্যাটারি চালিত চশমার প্রয়োজন, বড্ড প্রয়োজন।
-মা?  তোমার নাম কি?
-লুৎফা জেরিন!
-বাহ্ খুব সুন্দর নাম
- কোন ক্লাসে পড়?
-ক্লাল এইটে
অবাক হলাম বইকি, এত্ত ছোট্ট একটা মেয়ে ক্লাস এইটে পড়ে!!
-লুৎফা?  ফাহমিদার খবর কি রে?
-ভাল আছে, এই সামনের মাসে স্বামীর সাথে দুবাই যাবে। একটা মেয়ে এবং  একটা ছেলে আছে
হঠাৎই মনে হল আমার তানভিরের জন্মের প্রায় ১৫ দিন পর ফাহমিদার মেয়ে হয়।
কথা আর বাড়ালাম না আমরা, একটা হোটেলে গিয়ে খাবার অর্ডার করা হল।  খেয়ে যথারীতি বিল দিল কয়েছ।
শেষ বয়সে বিয়ে করছে কয়েছ, অথচ কত আনন্দ
,সেই প্রথম ছেলেটার চোখে আনন্দে জল চলে আসল। সাথে আমারও...
১ এপ্রিল বিয়ে!!  টিক টিক সবাই হাজির।
বরের গাড়িতে সওয়ার হলাম আমি সাথে আমার তানবির।
বাপ বেটা টিকই একসাথে সব সময়ে মিলে যাই।

সিটি হাইজে বিয়ে কনের বাসার টিক কাছেই।
পৌঁছলাম দুপুর ২ টা নাগাদ। বিয়েতে অনেকেই আসছে। স্পেশাল গেষ্ট হিসেবে তাহের, হাফিজা খানম সারা, এমনকি মাহবুব, অবশ্য আব্দুল খালিক আসতে পারেনি।
ওহ ভুলেই গিয়েছি কিছু কথা বিয়েতে এসে জানতে পারলাম মাহবুব বর্তমানে প্রাইভেট কোম্পানি তে সিইও হিসেবে জয়েন করেছে সদ্য। জাপান থেকে ফিরে অবশ্য বেশ কয়েক বছর দেশে ছিল তারপর আবার বিদেশে পাড়ি জমায় শেষমেষ দেশেই টিকে। আর বাকি রইলো সারা ও তাহের। ভাই বোন এখন ইংল্যান্ডেই থাকে, দেখলাম সারা'র একটা মেয়েও হয়েছে। আর তাহের! দেশে ব্যাচারা কিছু করতে না পেরে বোনের কাছে যেতে বাধ্য হয়। 
খালিক এবং মাসুদের  শেষ বয়স টাও মনে হয় আরবের মাটিতেই কাটবে আজও তারা সৌদি প্রবাসী। ফাঁকের মধ্যে রয়ে গেল খালেদ।
সে এখন ফ্রান্সিস!  মানে ফ্রান্সে থাকে। এবার দেশে আসায় বিয়েতে জয়েন করতে পারল।
এখনও দেখা হয়নি, গত বছর ফোন পেয়েছিলাম। তখন অফিস টাইম ছিল তাই রিসিভড করতে পারি নি,  শুনেছি তার আট-তলা বাড়ির শুভ উদ্ভোধন উপলক্ষ্যে ফোন দিয়েছিল।
বর পক্ষের ভোজের সময় হয়ে এল, খেয়ে দেয়ে সবার সাথে কথা হল,ভালই লাগল।
সবাই তানভিরের মাকে কেন নিয়ে যাই নি সে সম্মোধে কড়া কথাও কেউ কেউ শুনাল।
এবার যাবার পালা, তবে সবান সাথে না তানভির কে নিয়ে আজ পার্কে যাব ভেবেছিলাম।
রাত হয়ে যাবে তবে আজই যাব! 
ওসমানি শিশু পার্কে প্রবেশ করলাম।
জায়গাটা আগের মতই, একটা স্মৃতি জড়িয়ে আছে জায়গাটায় সেটা অবশ্য তানভিরের জানার প্রয়োজন নেই তবে এটা জানা দরকার আমার একটা স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত ৯ টার কিছু বেশি হয়ে গেল।
তানভিরের মা আজ নতুন শাড়ি পরেছে, তাকে আজ অন্য রকম লাগছে,  একটা লাল পরী লাগছে।
তানভিরের মা কখনো সাজে না অফিসে যখন যেতাম সেই সাদা মাটা ধরনের খাকি পোশাক পরে যেত।
তানভিন না খেয়ে আজ ঘুমিয়ে পড়েছে।
কাল বিকেলে যাত্রা তারা দেরিতে ঘুম থেকে উটলেও কোনো সমস্যা নেই।
ঘরের লাইট অফ হয়ে গেল!  আদিবা ঘরকে আলোকিত করে রেখেছে।
মোবাইলের উপর চোখ রাখতে সময় দেখতে পেলাম ১.৩৪ মিনিট!  দেখতে পেলাম মোবাইল টা আমার না ওটা আদিবার। মোবাইলের ওয়ালপেপার টা কার? একটা মেয়ে , কিছুটা চেনা মুখ। তবে কি আদিবা????
না তা  হয় না!  আদিবা কখনোই জানবে না।
চোখে হাত দিতেই টের পেলাম চোখে পানি।
আশ্চর্যতো আমি কাঁদছি কেন?...........